পৌষ সংখ্যায় এমরান চৌধুরী এর ছড়া - শংখপাড়ের উপাখ্যান


শংখপাড়ের কিশোর আমি শংখপাড়ে বাড়ি
সে বাড়িটির দখিন দিকে গুবাক তরুর সারি
উঠোন জুড়ে সীমের মাচান- মাচান ভরা লাউ 
সাঁঝ ঘনাতেই ভিড়তো ঘাটে অচিন পুরের নাও।

এ বাড়িটি মায়ের স্মৃতি বাবার চোখের আলো
যদিও সেটি দেখতে তেমন ছিল না জমকালো
মা ছিলো না, বাবার কাছে আমরা দুটো ভাই
সময়মত ঠিকই পেতাম মায়ের আদরটাই।

শংখপাড়ের এ পাড়াতে আচানক একদিন
মানব নামের দানব নেমে সব করে দেয় লীন
ছাইয়ের মতো কী ছিটিয়ে লাগায় আগুন দোরে
 সে আগুনে দানব হাসে মানব মরে পোড়ে।

বাবা ছিলেন ‘মুক্তি’ নাকি পোড়াতে তাঁর ঘর
তার জন্যে পুড়িয়ে দিলো হাজারো অন্তর
চিকন চাকন লাউয়ের ডগা সব পুড়ে হয় ছাই
চালার ফাঁকের ময়না জোড়া পায় না খুঁজে ঠাঁই।

নারী পুরুষ যাকেই পেলো বাঁধল সবার চোখ
দানবগুলোর সঙ্গী ছিলো দীঘল গলার লোক
লোকটি ছিল শঙ্খপাড়ের বাবার চেনা জানা 
তার ইশারায় দিন দুপুরে দেয় দানবে হানা।

বাবা আমার বেপরোয়া প্রাণ-মুক্তিকামী মুখ 
দেখামাত্র ঝাঁঝরা করে প্রিয় বাবার বুক
বাবার সাথে ধূলোয় গড়ায় অনেক শিশু নারী 
রক্ত গাঙে সিনান করে গুবাক তরুর সারি।

বাবার মত অনেক প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া
লাল গোলকের স্বাধীনতা সবুজ পাতার ছাওয়া
সবুজ পাতায় রক্তজবার নিত্য ছবি আঁকি
বাবার মতো সে ছবিটি মাথায় তুলে রাখি।   


মন্তব্যসমূহ